1.1 ভৌত রাশির একক

 



ভূমিকা: বিজ্ঞান ও পদার্থবিদ্যা

বাংলা বা সংস্কৃত "বিজ্ঞান" শব্দটির অর্থ "বিশেষ জ্ঞান", এটা তোমরা সবাই জানো। ইংরেজি "Science" শব্দটি এসেছে ল্যাটিন শব্দ "Scientia(সাইনশিয়া)" থেকে যার অর্থও হলো "to know" অর্থাৎ জানা।

রহস্যময় প্রকৃতিকে নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। মানুষের স্বভাবত বৈশিষ্ট্যই হলো অজানাকে জানার সদিচ্ছা। প্রকৃতির মধ্যে ঘটে চলা বিভিন্ন ঘটনা মানুষকে অবাক করেছে বারবার। আর সেখান থেকেই জন্ম হয়েছে বিজ্ঞান মনস্কতার। তবু সভ্যতার ইতিহাস লক্ষ্য করলে দেখা যায় খুব অল্প সংখ্যক মানুষেরই প্রচলিত ধ্যান ধারণার বাইরে কিছু ভাবার "অবসর" ছিল। গ্রীক শব্দ "Scholē" মানে হলো "অবসর (leisure)"। আর যেসব মানুষের এসব চিন্তা ভাবনার অবসর ছিল তাদের বলা হতো "Scholar" এবং যেখানে তারা কাজ করতো সেই জায়গার নাম ছিল "School"। 

পদার্থবিদ Dr. R. P. Feynman খুব সুন্দর একটি তুলনার সাহায্যে প্রাকৃতিক ঘটনাবলি অনুধাবনের বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। ধরো, তুমি দাবা খেলার নিয়ম সম্পর্কে কিছুই জানোনা। অনেকক্ষণ ধরে তুমি যদি খেলাটা পর্যবেক্ষণ করো, তাহলে তার নিয়মগুলি সম্পর্কে তোমার একটি ধারণা তৈরি হবে। হয়তো কিছু নিয়ম সম্পর্কে সঠিক ধারণা নাও তৈরি হতে পারে। কোনো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়, তোমার অনুমানের বাইরে নতুন কিছু একটা চাল দিয়ে তোমাকে অবাক করতেই পারে। প্রকৃতিকে জানার ব্যাপারটিও ঠিক একই রকম। আমরা প্রকৃতিকে পর্যবেক্ষণ করি এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক সূত্র আবিষ্কার করে থাকি। আবার এমনও হতে পারে প্রথমে যে সূত্রটি অনুমান করা হয়েছিল, তা নতুন কোনো ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম হলো না। সেক্ষেত্রে আগের সূত্রটি ভুল বা অপ্রযোজ্য বলা হয় এবং সূত্রটি modify করার বা নতুন সূত্র আবিষ্কারের প্রয়োজনীয়তা পড়ে।

আমরা পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে "সাধারণ জ্ঞান" অর্জন করি। "বিজ্ঞান" হলো প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোকে বিস্তারিতভাবে যতটা সম্ভব গভীরে গিয়ে বোঝার উদ্দেশ্যে এক সুশৃঙ্খল পদক্ষেপ এবং সঠিক পর্যবেক্ষণ (Correct Observation), নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষা (Controlled Experiments) ও যুক্তির (Reason) দ্বারা অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে প্রাকৃতিক ঘটনাগুলো সম্পর্কে পূর্বানুমান ও সম্ভব হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা।

প্রথমে প্রকৃতি সম্পর্কে আবিষ্কৃত তথ্যকে "প্রকৃতিবিজ্ঞান (Natural Science)" বা "পদার্থবিজ্ঞান" বলা হত। কিন্তু, মানুষের জ্ঞানের পরিধি ও বৈচিত্র্য বাড়ার সাথে সাথে বিজ্ঞানকে বিভিন্ন শাখায় বিভক্ত করার প্রয়োজন হয়। বর্তমানে পদার্থবিজ্ঞান (Physics) কথাটি একটি সীমাবদ্ধ অর্থে ব্যবহৃত হয়। "Physics" কথাটির উৎপত্তি গ্রীক শব্দ "Physis" বা "Fusis" থেকে, যার অর্থ "প্রকৃতি (Nature)"।

প্রকৃতি মূলত দুটি স্বাধীন সত্তা "পদার্থ (Matter)" ও "শক্তি (Energy)"-র সমন্বয়ে গঠিত। 

প্রকৃতিতে যা কিছু ইন্দ্রিয় দ্বারা অনুভব করা যায়, যার ভর (Mass) আছে এবং কিছুটা পরিমাণ স্থান দখল করে থাকে, তাকে পদার্থ বলে। যেমন: জল, মাটি, অক্সিজেন, দুধ ইত্যাদি। 

আবার, বস্তু নিজে নিজে কখনো কাজ করে না। যার দ্বারা বস্তু কাজ করার সামর্থ্য অর্জন করে তাকে শক্তি বলে। যেমন: ফ্যান একটি বস্তু। এটি নিজে নিজে চলতে পারে না। বিদ্যুৎশক্তি এটিকে গতি দান করে।

শক্তি ছাড়া পদার্থ অচল ও পরিবর্তনহীন। পদার্থের মধ্যে শক্তি সক্রিয় হলেই তার গতি ও অবস্থার পরিবর্তন হয়। আবার শক্তির অস্তিত্বও আমরা পদার্থের মাধ্যমেই অনুভব করি। 

পদার্থ ও শক্তির মধ্যে পারস্পরিক যে আন্ত‌ঃক্রিয়া (Interaction) পর্যবেক্ষণ করা এবং তা থেকে পদার্থ ও শক্তির স্বরূপ ও বিভিন্ন ধর্ম সম্বন্ধে জ্ঞান অর্জন করাই হলো পদার্থবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য।

এখানে পদার্থ বলতে শুধু আমাদের চারপাশের দৃশ্যমান পদার্থ নয়, অণু, পরমাণু থেকে শুরু করে ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন থেকে আরো সূক্ষ্ম কণাও হতে পারে। আর শক্তি মূলত আট প্রকার - 

1) যান্ত্রিক শক্তি, 2) তাপ শক্তি, 3) আলোক শক্তি, 4) শব্দ শক্তি, 5) চৌম্বক শক্তি, 6) তড়িৎ শক্তি, 7) রাসায়নিক শক্তি এবং 8) পারমাণবিক শক্তি।

ভৌত রাশির পরিমাপ: একক

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রতিটি কাজের সাথেই পরিমাপের ব্যাপারটি জড়িত রয়েছে। এছাড়া আগেই বললাম বিশ্ব প্রকৃতির অজানা বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষণা করে থাকেন। প্রাকৃতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়ার জন্যে প্রয়োজন পরিমাপের। পরিমাপের জন্য অনেক যন্ত্র আবিষ্কার হয়েছে, যাদের দ্বারা অনেক সূক্ষ্ম পরিমাপ করা যায়। এখন প্রশ্ন হলো কী পরিমাপ করবো? কীভাবে করবো? পরিমাপ করতে কীসের প্রয়োজন? চলো এখন এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজবো আমরা।

কোনো বস্তুর বর্ণ, গন্ধ, স্বাদ ইত্যাদি ধর্মগুলিকে ইন্দ্রিয় দিয়েই পর্যবেক্ষণ করা যায়। পরিমাপ করা সম্ভব নয়। এটি হলো গুণগত পর্যবেক্ষণ। আবার বস্তুর দৈর্ঘ্য, ওজন, তাপমাত্রা ইত্যাদি ধর্মগুলো পর্যবেক্ষণের সাথে সাথে পরিমাপও করা যায়। এই যে বস্তুর "দৈর্ঘ্য", "ওজন", "তাপমাত্রা" বললাম, এগুলিকে বলা হয় ভৌতরাশি বা প্রাকৃতিক রাশি (Physical Quantity)।

সুতরাং, পরিমাপযোগ্য প্রাকৃতিক বিষয়, যেগুলি দ্বারা প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোকে ব্যাখ্যা করা যায়, তাদের ভৌত রাশি বা প্রাকৃতিক রাশি বলে।

কোনো ভৌত রাশির পরিমাপ অর্থাৎ তার পরিমাণকে একটি সংখ্যা (Number) এবং একটি একক (Unit) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন ধরো তোমার উচ্চতা বললে "6 ফুট"। এখানে "ফুট" হলো, উচ্চতা অর্থাৎ দৈর্ঘ্যের একক এবং 6 সংখ্যাটি বোঝাচ্ছে, তোমার উচ্চতা হলো "ফুট" নামের কোনো নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্যের 6 গুণ। 

সুতরাং, ভৌত রাশির সঠিক পরিমাপের সময় সমজাতীয় রাশির একটি সুবিধাজনক, নির্দিষ্ট পরিমাণকে প্রমাণ (Standard) হিসাবে ধরে নিয়ে রাশিটির পরিমাণ ওই প্রমাণ মানের কতগুণ তা তুলনা করা হয়। এই প্রমাণ মানটিকে ভৌত রাশিটির একক (Unit) বলা হয়। 

এককের বৈশিষ্ট্য: 

1) এটির একটি সুস্পষ্ট সংজ্ঞা থাকতে হবে।

2) এটির পরিমাণ সুবিধাজনক ও সর্বজনগ্রাহ্য হতে হবে।

3) স্থান ও কালের পরিবর্তনে এটিকে অপরিবর্তিত থাকতে হবে।

4) ভৌত অবস্থার পরিবর্তনে এটি অপরিবর্তিত থাকবে।

এককের প্রয়োজনীয়তা: 

একক ছাড়া পরিমাপ অর্থহীন। যেমন একটি মিনারের উচ্চতা "অনেক" বা শুধু একটি সংখ্যা 50 বললে তার উচ্চতা সম্পর্কে নির্দিষ্ট করে কিছুই বোঝা যায় না। এককের মাধ্যমে কোনো ভৌতরাশির পরিমাপ সম্পর্কে যথাযথ ধারণা তৈরি হয়। যেমন মিনারটির উচ্চতা "50 মিটার" বললে তার উচ্চতা সম্পর্কে একটা যথাযথ ধারণা তৈরি হয়। এখানে "মিটার" হল দৈর্ঘ্যের একক এবং মিনারের উচ্চতার পরিমাপ হলো "1 মিটার" দৈর্ঘ্যের 50 গুণ।

একক এর প্রকারভেদ:

আগের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম প্রত্যেক রাশির পরিমাপের জন্য এক একটি এককের প্রয়োজন। কিন্তু ভেবে দেখো তো প্রকৃতিতে এরকম রাশি তো হাজার হাজারটা আছে। তাহলে কি এককও এতগুলো আছে? অবশ্যই না। ভাগ্যক্রমে দেখা গেছে, ভৌত রাশির সংখ্যা অসংখ্য হলেও শুধুমাত্র তিনটি রাশির (দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়) একক থেকেই বাকি রশিগুলির একক পাওয়া যায়। তাই দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একককে প্রাথমিক একক (Fundamental Unit) বা মূল একক (Base Unit) এবং এই রাশিগুলিকে প্রাথমিক রাশি (Fundamental Quantity) বা মূল রাশি (Base Quantity) বলে। যদিও একটু পরেই দেখবে এরকম প্রাথমিক রাশির সংখ্যা মোট সাতটি। আর বাকি প্রাথমিক একক থেকে প্রাপ্ত যত একক আছে তাদের লব্ধ একক (Derived Unit) এবং সেই রাশিগুলিকে লব্ধ রাশি (Derived Quantity) বলে।  

প্রাথমিক একক: যে সমস্ত ভৌত রাশির একক পরস্পরের ওপর এবং অন্য কোনো ভৌত রাশির এককের ওপর নির্ভর করে না এবং যাদের এককের সাহায্যে অন্যান্য সমস্ত ভৌত রাশিগুলির একক নির্ণয় করা যায়, সেই সমস্ত রাশিকে প্রাথমিক বা মূল রাশি এবং তাদের একককে প্রাথমিক বা মূল একক বলে। 

যেমন আগেই বললাম দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একক, এরা পরস্পরের ওপর বা অন্য কোনো ভৌত রাশির ওপর নির্ভরশীল নয়।

লব্ধ একক: যে সমস্ত ভৌত রাশির এককগুলি এক বা একাধিক মূল এককের সাহায্যে গঠন করা হয়, সেই সমস্ত ভৌত রাশিকে লব্ধ রাশি এবং তাদের একককে লব্ধ একক বলা হয়। 

যেমন দ্রুতি পরিমাপের জন্য দূরত্ব এবং সময় এই রশিদুটি জানার প্রয়োজন হয়। দূরত্বকে সময় দিয়ে ভাগ করে দ্রুতির মান বের করতে হয়। সুতরাং দ্রুতি একটি লব্ধ রাশি এবং এর একক হল লব্ধ একক।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোণ এবং ঘনকোণের একক যথাক্রমে "রেডিয়ান (Radian)" ও "স্টেরেডিয়ান (Staradian)"। এদের সম্পূরক একক বলা হতো। পরে 1995 খ্রিষ্টাব্দে এদের লব্ধ এককের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

একক পদ্ধতি:

প্রচলিত একক পদ্ধতি মূলত তিনটি।

1) CGS পদ্ধতি: দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একককে যথাক্রমে সেন্টিমিটার (centimetre), গ্রাম (gram) ও সেকেন্ড (second) ধরা হয়।

2) FPS পদ্ধতি: দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একককে যথাক্রমে ফুট (foot), পাউন্ড (pound) ও সেকেন্ড (second) ধরা হয়। একে ব্রিটিশ পদ্ধতিও বলা হয়।

3) MKS পদ্ধতি: দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একককে যথাক্রমে মিটার (metre), কিলোগ্রাম (kilogram) ও সেকেন্ড (second) ধরা হয়।

SI পদ্ধতি: ধরো তোমার মা তোমাকে এক গ্লাস জল আনতে বললো। তুমি গিয়ে দেখলে তিনটে আলাদা আলাদা size এর গ্লাস আছে। তুমি কি বুঝতে পারবে ঠিক কোন গ্লাসের জল মা খেতে চেয়েছে? ঠিক একইভাবে এত ধরনের পদ্ধতিতে কোনো ভৌত রাশি পরিমাপের একাধিক একক থাকলে তা খুব জটিল ও অসুবিধাজনক। পরিমাপের জন্য প্রতিটি একক পদ্ধতিতে আলাদা পরিমাপের যন্ত্রও তৈরি করতে হয়। এই জটিলতা দূর করার জন্যে International Bureau of Weights & Measures, SI পদ্ধতি বা আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতি ব্যবহার করার প্রস্তাব দেয়, যা সর্বজন স্বীকৃত। এই পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের একক হিসাবে MKS পদ্ধতির একক গুলিকেই ব্যবহার করা হয়েছে অর্থাৎ দৈর্ঘ্যের একক মিটার, ভরের একক কিলোগ্রাম ও সময়ের একক সেকেন্ড।

আবার তাপবিজ্ঞান, আলোকবিজ্ঞান, তড়িৎবিজ্ঞান ও পদার্থের আণবিক ধর্ম, এসব ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ভৌত রাশির এককগুলিকে লক্ষ করে দেখা গেছে, এগুলি দৈর্ঘ্য, ভর ও সময়ের এককের উপর নির্ভরশীল ঠিকই, কিন্তু তা খুব জটিল। তাই SI পদ্ধতিতে প্রাথমিক রাশিগুলির সারিতে আরও চারটি রাশিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। SI পদ্ধতিতে মোট সাতটি মূল একক আছে। সেগুলি হলো:


এই এককগুলির সংজ্ঞা তোমরা যেকোনো বইয়ে বা ইন্টারনেট এ পেয়ে যাবে। সেগুলি মনে রাখার বিশেষ কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। তবে উক্ত এককগুলি ঠিক কতটা পরিমাণ বোঝায়, সেটা সম্বন্ধে তোমাদের বাস্তব ধারণা থাকা প্রয়োজন।

উপসর্গ বা গুণিতক (Prefixes):

বিজ্ঞানীরা এমন অনেক রাশি ব্যবহার করে থাকে যাদের মান খুব ছোট বা বড় হয়। যেমন শূন্য মাধ্যমে আলোর বেগ প্রায় 300000000 m/s, আবার একটি নিউক্লিয়াসের ব্যাসার্ধ 0.000000000000001 m।এগুলি পড়া, লেখা, বোঝা ও মনে রাখা অসুবিধাজনক। এই সমস্যা সমাধানের জন্য 10 সংখ্যাটির ঘাত (Power) ব্যবহার করা হয়। যেমন আলোর বেগ 3×`10^8` m/s লেখা এবং নিউক্লিয়াসের ব্যাসার্ধ `10^{-15}` m লেখা সুবিধাজনক।


একক লেখার বৈশিষ্ট্য (Symbol of Units):

প্রতিটি একককে সংক্ষেপে লেখার জন্য নির্দিষ্ট প্রতীক ব্যবহার করা হয় এবং সেগুলি লেখার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কিছু নিয়ম আছে।

1. কোনো রাশির মান প্রকাশ করার জন্য একটি সংখ্যা লিখে তারপর একটি ফাঁকা জায়গা (space) রেখে এককের সংকেতটি লিখতে হয়। 60 kg, 75 cm ইত্যাদি। তবে ডিগ্রি (°), মিনিট (`'`) এবং সেকেন্ড (`''`) লেখার সময় সংখ্যার পর কোন ফাঁকা জায়গা রাখতে হয় না।

2. এককের সংকেত লেখা হয় সোজা অক্ষরে যেমন মিটারের জন্য m, সেকেন্ডের জন্য s ইত্যাদি। তবে রাশির সংকেত লেখা হয় italic বা বাঁকা অক্ষরে যেমন ভরের জন্য m বেগের জন্য v ইত্যাদি।

3. প্রতীকের মাঝে বা পরে dot(.) চিহ্ন দেওয়া যাবে না। যেমন, সেন্টিমিটার - cm (c.m. বা cm. নয়)। তবে বাক্যের শেষে থাকলে fullstop হিসেবে dot চিহ্ন দেওয়া যাবে। আবার কিছু non-SI এককের প্রতীকের শেষে দেওয়া যেতে পারে, যেমন ইঞ্চি - in.

4. বহুবচন বোঝাতে s বা es যোগ করা যাবে না। যেমন 5 g (5 gs নয়)। তবে পুরো বানান করে লিখলে বহুবচন হিসেবে s বা es লেখা যেতে পারে। যেমন 50 metres per second, কিন্তু 0.5 metre per second বা 1 metre per second। 30 metres/s বা 10 m/second - এগুলি হল ভুল ব্যবহার।

5. বিজ্ঞানীদের নাম অনুসারে পাওয়া এককগুলির প্রতীকে প্রথম অক্ষরটি হবে বড় হরফ, তবে বানান করে লিখলে সব ছোট হরফ হবে। যেমন, নিউটন - N, অ্যাম্পিয়ার - A, কেলভিন - K, পাস্কাল - Pa, কিন্তু newton, ampere, kelvin, pascal ইত্যাদি।

6. যেকোনো বীজগাণিতিক রাশির মতোই প্রতীকগুলো নিয়েও গুণফল বা ভাগফল নির্ণয় করা যাবে। যেমন, 10 m/s × 2 s = 20 m, 10 m ÷ 5 s = 2 m/s ইত্যাদি।

7. দুটি এককের প্রতীকের গুন বোঝাতে একক দুটির মাঝে একটি space বা dot ব্যবহৃত হবে। যেমন, N m বা N•m ইত্যাদি।

8. একাধিক একক এর প্রতীক দিয়ে ভাগ বোঝাতে তির্যক রেখা (/) বা ঋণাত্মক সূচক ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন J/`(m^2\cdot s)` বা `J\cdot m^{-2}\cdot s^{-1}` বা `\frac J{m^2\cdot s}` (`J`/`m^2`/`s` বা `J`/`m^2\cdot s` নয়)।

9. তাপমাত্রা কেলভিন একটি প্রতীকে ডিগ্রী চিহ্ন (°) ব্যবহার করা যাবে না। যেমন 273 K (273 °K নয়), আবার °F, °C প্রতীকগুলো সঠিক।

10. ভুল ব্যবহার sec, sq.mm, cc; সঠিক ব্যবহার s, `mm^2` বা square milimetre, `cm^3` বা cubic centimetre ইত্যাদি।

11. এককের উপসর্গ (k, G, M) এককের (m, W, Hz) সাথে কোন ফাঁক ছাড়া যুক্ত হবে যেমন km, GW, MHz ইত্যাদি।

🤓Quiz Time🤓

উপরে এতক্ষণ যা আলোচনা করলাম, তোমরা ভালো করে পড়ো। আশা করছি তোমাদের খুব কাজে লাগবে। তোমাদের কেমন লাগলো comment করে জানাও। পারলে  বন্ধুদেরও share করো। এখন তোমাদের জন্যে রয়েছে আর একটি মজার জিনিস। এখানে আছে তোমাদের জন্য কিছু MCQ প্রশ্ন। তোমরা ভালো করে পড়াশোনা করে এগুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করো। All the best😊👍.

এখানে ক্লিক করো👉 🤓Quiz Time🤓

Leave a Reply:

Previous Post Next Post